About

Journalist Society for Human Rights and Welfare (JSHRW) প্রতিষ্ঠানটির নামের মধ্যেই “মানবাধিকার” শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে, মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাকে সংগঠনের একটি মূল উদ্দেশ্য ও নীতিগত নীতিমালা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ১৯৮৪ সালে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণায় আন্তর্জাতিক আইন বাস্তবায়নে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আর সংগঠনটি ২০০৪সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন থেকেই আইনসঙ্গত উপকরণ এবং স্থল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা করে চলছে।

মানবাধিকার প্রসঙ্গে কিছু কথা

মানবাধিকারের বিকাশ ও সুরক্ষায় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ২০০৫ সালের ২০ মার্চ জাতিসংঘ সংস্কারের জন্য মানবাধিকার বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন। মূলত: শান্তিরক্ষার জন্য নিরাপত্তা পরিষদ, উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ কিন্তু মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য কোন পরিষদ গঠিত হয়নি। এই অসম ব্যবস্থা দুরীকরনের লক্ষ্যে মানবাধিকার কমিশনের পরিবর্তে গঠন করা হয় নতুন ‘মানবাধিকার কাউন্সিল’। ২০০৬ সালের ১৫ মার্চ ১৯১ সদস্যের সাধারণ পরিষদের সভাপতি জ্য ইলিয়াসনের সভাপতিত্বে মানবাধিকার কাউন্সিলটি ১৭০-৪ ভোটে গঠিত হয়। জাতিসংঘের ১৯১টি সদস্য রাষ্ট্র ৪৭টি দেশকে ২০০৬ সালের ৯মে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত করে।
এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, ৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে যে আইন সংসদে পাশ হয় তা ২০০৮ সালের মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের পরিবর্তিত রূপ। অতপর চলছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সময়ের চাহিদা অনুসারে কিছু বিষয় গুরুত্বের দাবী রাখে। যেমন- মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব, সালিশ, এইডস ও তার প্রতিকার  ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশন এবং ঢাকার বিহারী ক্যাম্পের দুর্দশা, বায়ু-পানি-মাটি শব্দ দুষণ ও এর প্রতিক্রিয়া আইনগত সহায়তাদানের ক্ষেত্রে একজন মানবাধিকার কর্মীর ভূমিকা, বাংলাদেশে মানবাধিকারের সঙ্গে জড়িত সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংস্থা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা অতীব জরুরি।

বাংলাদেশ সংবিধানে মানবাধিকার অনুচ্ছেদ ১১ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
কিন্তু উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রাপ্য অধিকার কি পাচ্ছেন? বস্তিবাসী, নদী পাড়ের মানুষ, পাহাড়ী ঢালে বসবাসরত মানুষ, দুর্গম চরে বসবাসরত মানুষের অসুবিধা আলোকপাত করার যথেষ্ট কার্যকরী সংগঠন কি গড়ে উঠেছে? দারিদ্রতা, জনসংখ্যাধিক্য কৃষি ও শিল্পে অনগ্রসরতা, শিক্ষার অভাব, পরিবার পরিকল্পনা প্রভৃতি সরকার গৃহীত পন্থা কার্যকর হোক।
সালিশের নামে জুতাপেটা, গাছে বেঁধে পিটানো এবং বিভিন্নভাবে মানসিকভাবে নির্যাতন করার প্রতিবাদে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ সময়োপযোগী।
১৯৮১ সালে আমেরিকায় প্রথম এইডস রোগ ধরার পর এ পর্যন্ত ইউরোপ, আফ্রিকা এশিয়া হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৬-৪৪ অনুচ্ছেদে বিভিন্ন ধরনের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া আছে। বাংলাদেশে মৌলিক অধিকারগুলি বাস্তবায়নে এনজিও গুলির বলিষ্ঠ পদক্ষেপ সময়ের দাবী। বিভিন্ন এনজিও সংগঠন ও সংস্থা মানবাধিকার বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। যেমন- (১) জার্নালিস্ট সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ওয়েলফেয়ার (২) বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা (৩) আইন ও সালিশ কেন্দ্র (৪)লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশন (৫) সার্স মানবাধিকার সোসাইটি (৬) হাসাব (৭) বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এন্ড প্রেস সোসাইটি (৮) বস্তি বিকল্প আবাসন সোসাইটি (৯) টেরি দেশ হোমস ইতালিয়া ইন বাংলাদেশসহ অনেক সংগঠন মানবাধিকারের কাজ করে চলেছে।
কিন্তু সমস্যা হলো এনজিও মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে অধিক থেকে অধিকতর সক্রিয় করার কাজ ক্ষমতাসীন দলকেই আন্তরিকভাবে নিতে হবে। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সরকারী দল বিরোধী দল, সুশীল সমাজসহ সকলের এগিয়ে আসাই হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কল্যাণকর। জাতিসংঘের মহাসচিব এর সাথে বাংলাদেশ ও সহযোগী হয়ে উজ্জ্বল পৃথিবী গঠনে সচেষ্ট ভূমিকা রাখাই হবে গ্রহণযোগ্য সমাধান।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, সভ্যতার শুরুতে মানুষ ছিল বর্বর কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে নিজেদেরকে গুছিয়ে নিতে শিখেছে তখন থেকেই মুলত মানবাধিকারের সুচনা।

তার অনেক অনেক বছর পরে, আঠারো শতকে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বিকাশকালে এটি পূর্ণতা পেয়েছে বলা যায়।

একটি রাষ্ট্রে প্রত্যেক নাগরিকের  কিছু মৌলিক অধিকার থাকে, আর সেগুলোই মানবাধিকার। যেমন, জীবনধারণ ও বেঁচে থাকার অধিকার, অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-আশ্রয়ের অধিকার। আরও আছে মতামত প্রকাশের অধিকার, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অধিকার ও আরও অনেক কিছু।

মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানবতাকে প্রচণ্ডভাবে আঘাত হানে। ধ্বসে পড়ে মানবাধিকারের অঙ্গীকার।

এর পরে, ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার সনদ বা সার্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণা অনুমোদিত হয়। এটিই মানবাধিকারের দলিল হিসেবে পরিচিত।

পাশাপাশি মানবাধিকার সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতে ও মানবাধিকার সনদের অনুমোদনকে স্মরনীয় করে রাখতে  মানবাধিকার সনদ অনুমোদনের দিনটিকে জাতিসংঘ মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়।

১৯৫০ সালের চার ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তিনশ ১৭তম পূর্ণ অধিবেশনে সদস্যভূক্ত দেশসহ আগ্রহী সংস্থাগুলোকে এ দিনটি তাদের মতো করে উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়।

এরপর থেকে ১০ ডিসেম্বর সারা বিশ্বে মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে  আসছে।